Wednesday, April 25, 2018

হাট্টিমা টিম টিম

এত বছর পর্যন্ত জানতাম এই 'হাট্টিমা টিম টিম' ছড়াটা ৪ লাইন। আসলে এটা রোকনুজ্জামান খানের  ৫২ লাইনের অসম্ভব সুন্দর একটি ছড়া।

'টাট্টুকে আজ আনতে দিলাম
বাজার থেকে শিম
মনের ভুলে আনলো কিনে
মস্ত একটা ডিম।
বলল এটা ফ্রি পেয়েছে
নেয়নি কোনো দাম
ফুটলে বাঘের ছা বেরোবে
করবে ঘরের কাম।
সন্ধ্যা সকাল যখন দেখো
দিচ্ছে ডিমে তা
ডিম ফুটে আজ বের হয়েছে
লম্বা দুটো পা।
উল্টে দিয়ে পানির কলস
উল্টে দিয়ে হাড়ি
আজব দু'পা বেড়ায় ঘুরে
গাঁয়ের যত বাড়ি।
সপ্তা বাদে ডিমের থেকে
বের হল দুই হাত
কুপি জ্বালায় দিনের শেষে
যখন নামে রাত।
উঠোন ঝাড়ে বাসন মাজে
করে ঘরের কাম
দেখলে সবাই রেগে মরে
বলে এবার থাম।
চোখ না থাকায় এ দুর্গতি
ডিমের কি দোষ ভাই
উঠোন ঝেড়ে ময়লা ধুলায়
ঘর করে বোঝাই।
বাসন মেজে সামলে রাখে
ময়লা ফেলার ভাঁড়ে
কাণ্ড দেখে টাট্টু বারি
নিজের মাথায় মারে।
শিঙের দেখা মিলল ডিমে
মাস খানিকের মাঝে
কেমনতর ডিম তা নিয়ে
বসলো বিচার সাঁঝে।
গাঁয়ের মোড়ল পান চিবিয়ে
বলল বিচার শেষ
এই গাঁয়ে ডিম আর রবে না
তবেই হবে বেশ।
মনের দুখে ঘর ছেড়ে ডিম
চলল একা হেঁটে
গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে
ডিম গেলো হায় ফেটে
গাঁয়ের মানুষ একসাথে সব;
সবাই ভয়ে হিম
ডিম ফেটে যা বের হল তা
হাট্টিমাটিম টিম।
হাট্টিমাটিম টিম-
তারা মাঠে পারে ডিম
তাদের খাড়া দুটো শিং
তারা হাট্টিমা টিম টিম।'

ভাল থেকো

বলতে চেয়েছিলাম কি
অনেক ভেবে কোন কিছুই
বের করতে পারলাম না
শুধু স্মৃতি হাতড়ানোই সার হোল
ভাল থেকো খুব ভাল থেকো
কোন কিছু বলার দরকার নেই
আমি উত্তর চাইনি কখনও
কিছু বেড়ে বেশি হলে উপচে পড়ে
সেরকমই শুধু দীর্ঘশ্বাস শব্দহীন
স্মৃতি কখনও ঝরে যায় না
শুধুই অবধারিত বোঝা হবে
বেহায়া হয়ত তাই এখনও চাই
ভালই লাগে নিজের বেহায়াপনা
তোমার খারাপ চাইতে আজও কুন্ঠিত
ভাল থেকো খুব খুব ভাল থেকো
ভাল থাকার সংগা কি তুমি নিজেই জাননা
যা করছ তাতে শুখি করতে পারবে না।
মরিচিকার জগতের বাইরে কখনও
সময় পেলে এসে দেখো তোমার
অপেক্ষায় ঠায় দাড়িয়ে আছি
ভাল থেকো খুব খুব খুব ভাল থেকো

Saturday, April 21, 2018

নারী ও পুরুষ জাতির কতিপয় প্রকারভেদ

ক্ষণভেদে নারীজাতি চার প্রকার : পদ্মিনী,চিত্রিণী, শঙ্খিনী ও হস্তিনী ।

পদ্মিনী নারী : গাঢ় নীল উন্মুক্ত আকাশে উজ্জ্বল পুর্ণচন্দ্রকে যেমন সুন্দর ও মোহনীয় দেখায়, তেমনি রমনীয় পদ্মিনী নারী , আয়তলোচন,নারীসুলভ সরলতা ও সজ্জলতা,স্বর মধুর,বচন সুমিষ্ট, ব্যবহার নমনীয়,ধর্মপরায়ণা,মৃদুভাষিণী,সদা হাস্যময়,পতিব্রতা ,নারী জাতির মধ্যে এরাই সর্বোত্তম।

চিত্রিণী : নীলকমলের মত ক্লান্তিময় মুখযুক্ত, সুদীর্ঘ আয়ত নয়ন,সহজেই সাধারণের মন জয় করতে পারে , দৃঢ়চিত্তা, জিতেন্দ্রিয় , সত্যবাদিনী , পতি বাদে অন্য পুরুষের দিকে আকৃষ্ট হয় না , সর্বদা ধার্মিক, এরা উত্তম শ্রেনীর।

শঙ্খিনী : চোখ তেরছা, লোম বড় বড়, পিঙ্গলবর্ণ, চঞ্চলগতি , ধর্মে মত থাকে না , পরপুরুষের প্রতি আসক্ত হয় ,গুরুজনের প্রতি ভক্তি ভাব থাকে না । এরা মধ্যম প্রকৃতির ।

হস্তিনী : স্থুলাঙ্গী , মেদবহুল ,স্বার্থান্বেষী , মুখে নির্লজ্জতা থাকে ,এরা অধিক কৃচ্ছতায় কষ্ট পায় তবুও এদের স্বার্থভাব কমে না , পরপুরুষের প্রতি সর্বদা আকৃষ্ট থাকে , ধর্মে কর্মে মত থাকে না । এরা নারী জাতির মধ্যে সর্বাপেক্ষা নীচ ।

পুরুষ জাতিও চার প্রকার : শশক,মৃগ,অশ্ব ও বৃষ । এই চার প্রকার পুরুষের স্বভাব উল্লেখিত প্রানির স্বভাবের মত হয়ে থাকে , এর বিস্তারিত আলোচনার দরকার নাই ।

বিবাহ করার জন্য পদ্মিনী নারী সর্বোত্তম, আবার শঙ্খিনী ও হস্তিনী জাতীয় নারীকে কন্ট্রোল করার জন্য অশ্ব ও বৃষ জাতীয় পুরুষ দরকার ।

নারী ও পুরুষ জাতি সম্পর্কে ফকির লালন শাহ বলেছেন , 

"চিন্তামণি পদ্মিনী নারী এরাই পতিসেবার অধিকারী।
হস্তিনী শঙ্খিনী নারী তারা কর্কশ ভাষায় কয় বচন।।
শশক পুরুষ সত্যবাদী মৃগপুরুষ উর্ধ্ধভেদী।
অশ্ব বৃষ বেহুশ নিরবধি তাদের কুকর্মেতে সদাই মন।।"

Wednesday, April 04, 2018

মৌনতা

তোমার মৌনতা ছুয়েছে আমাকে
তোমাকে কাছে না পাওয়াতে
তোমার কান্না স্পর্শী করে
প্রজাপতির ঝাপ্টানো ডানায়
তুমি শুনিতে কি পাও
আমি আজও কেঁদে ফিরি
আমি আজ মুকতায় মগ্ন
শুধুই তোমার মৌনতায়
আমাকে কথা বলতে দাও
বলতে দাও অব্যক্ততার সাথে
আলোর ঝর্নাধারার মত
যেমন পবিত্র ঘন্টাধ্বনি
তুমিতো মিশে আছো
আঁধারে মৌনতায় প্রকৃতিতে
তোমার অব্যক্ততা মিশে আছে
তারায় তারায় দুরে বহু দুরে
আমি মিশে আছি মৌনতায়
তুমি কি আমার হবে কখনো

Tuesday, April 03, 2018

তারা

যখন আমি তোমার
পানে চেয়ে থাকি
তখন মনে হয় আমি
পলকহীন হয়ে যাই
হে দুর বহু দুরের তারা
আপন দূতিকায় সমুজ্জ্বল
আমি জানি তুমি
হয়ত আজ কালের সাক্ষী
সেই শত সহস্র বছরের
ভরা যৌবনের আলো
এখন আমার চোখে
তুমি যেখানেই থাক
আমার কাছে দ্বীপ্তিময়