Tuesday, July 26, 2016

ভাঙা মন

পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি সস্তা দরে বিক্রী হয় মানুষের ভাঙা মন। আর মন তখনই ভাঙে যখন সে মন কাওকে ভালোবাসতে জানে। যে ভালোবাসতে জানেনা তার মন হাজার চেষ্টা করেও তুমি ভাংতে পারবেনা। তুমি চলে যাবে হাসতে হাসতে সে দুদিনের মাথায় অন্য কারো হবে!

আর তুমি? ভাঙা মন?  তোমার ভাঙা মনে রোজ চাপ চাপ কষ্ট জমা হবে। চোরা বালিতে তলিয়ে যাওয়ার মত করে হারিয়ে যাবে তুমি ! যতবারি তুমি বেরিয়ে আসতে চাইবে ততোবার আরো গভীরে তলিয়ে যাবে।  তোমার চার পাশে একটা দেয়াল তৈরি হবে,কাটার দেয়াল। মুক্তির নেশায় বার বার তুমি সে দেয়ালে ক্ষত বিক্ষত হবে। বার বার তার প্রতি ঘৃনায় তোমার মুখ বাঁকিয়ে আসলেও সুন্দর স্মৃতি গুলো তোমায় কাঁদিয়েই যাবে।

কিছুতেই তুমি মানতে পারবেনা মানুষটা আজ বদলে গেছে! তোমার বার বার মনে হবে ভয়ংকর কোনো দু:স্বপ্ন দেখছো একটু পরেই সব ঠিক হয়ে যাবে।  এত কিছুর পরেও সে এসে বলবে আমার ভুল হয়ে গেছে আর তুমি তাকে ক্ষমা করে দিবে।

সে আর কোনোদিন আসবেনা! অনেক গুলো রাত অসস্র অশ্রু ঝড়িয়ে একদিন তুমি স্বাভাবিক হবে। তোমার জীবনে আবার নতুন কেউ আসবে। ভাঙা মনের সব চেয়ে বড় দোষ হলো এরা বার বার প্রেমে পড়ে! কাওকে ভোলার জন্য আবার নতুন করে কাওকে বিশ্বাস করে। অথচো বোকা মন জানেনা ভাঙা মনের মুল্য কত সস্তা। যে মানুষটা তোমার চোখের পানি মুছে দিয়ে নতুন স্বপ্ন দেখাবে একদিন সে মানুষটাও তোমায় লুটে পুটে ছুঁড়ে ফেলে দিবে! যাকে তুমি নতুন করে ভালোবেসেছো সে তোমায় ভালোবাসেনি তোমার ভাঙা মনের সুযোগ নিয়েছে মাত্র!

একটা কথা জেনে রাখো যতক্ষন তুমি তোমার নিজেকে না বদলাবে কেউ তোমায় বদলে দিবেনা। মনের কষ্টে তুমি তোমার ভাঙা মনের ঠিকানা অন্য কাওকে দিচ্ছ। ভেবে আছো সে হয়তো তোমার ক্ষত সারিয়ে দিবে! আসলে তুমি তোমার মনের ফাঁটলটা তাকে চিঁনিয়ে দিচ্ছ, সে ঠিক পুনরায় ওই ফাটলটাতেই আঘাত হানবে। এবার তুমি শুধু ভাঙবে না চুরমার হয়ে যাবে।

হাতের মুঠি শক্ত করে একবার তুমি ভাবো, তোমার থেকে তোমায় আর কে বেশি ভালোবাসে? এইযে তুমি কষ্ট পাচ্ছ তার চলে যাওয়া দেখে, আসলে তুমি তার চলে যাওয়া দেখে কষ্ট পাচ্ছনা, কষ্ট পাচ্ছ নিজের একলা জীবনের কথা ভেবে।

অতএব যে হাঁরিয়ে গিয়েছে তাকে ভুলে গিয়ে নিজেকে ভালবাস। ভাঙা মনের সবচেয়ে বড় গুন কি জানো?  একবার যদি এই মন আবেগটাকে জেদে বদলাতে পারে তাহলে এই মন সবার ধ্রা ছোঁয়ার ঊর্ধে যেতে পারে। এমন কিছু করো যাতে দশ জন তোমার দিকে তাঁকিয়ে থাকে। তবেই এমন একদিন আসবে দেখবে সেদিন যে মানুষটার কথা ভেবে রাতের পর রাত বালিশ ভিজিয়েছ তার কথা ভেবেই তোমার হাসি পাবে। ফেলে আসা ক্ষত বিক্ষত জীবনটাকে তোমার পাগলামি মনে হবে।

মৃত ব্যক্তিকে স্বপ্নে দেখলে

পরকালে কোন মানুষ কি অবস্থায় আছে তা একমাত্র আল্লাহ পাক ছাড়া কেউ বলতে পারে না। তবে অনেকেই ঘুমের মধ্যে মৃত ব্যক্তিকে স্বপ্ন দেখেন। ধরে নেয়া হয় স্বপ্নের মাঝে মৃত ব্যক্তিকে যে অবস্থাতে দেখা যায়, ওটাই তার প্রকৃত অবস্থা।

অর্থ্যাৎ যদি কেউ মৃত ব্যক্তিকে ভাল পোশাক পরা অবস্থায় বা সুস্বাস্থের অধিকারী দেখে, তাহলে বুঝতে হবে সে ভাল অবস্থায় আছে। আর যদি জীর্ণ, শীর্ণ স্বাস্থ্য বা খারাপ পোশাকে দেখে তাহলে বুঝতে হবে, ভাল নেই। তার জন্য তখন বেশি করে মাগফিরাত কামনা ও দোআ-প্রার্থনা করতে হবে।

ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, বিদ্রোহীরা যখন উসমান (রা)- এর বাসভবন ঘেরাও করেছিল, তখন উসমান (রা) বলেন, আমি গত রাতে স্বপ্ন দেখলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, উসমান আমাদের সাথে তুমি ইফতার করবে। আর ঐ দিনই উসমান (রা) শহীদ হলেন। (আল কাওয়ায়েদুল হুসনা ফী তাবীলির রুইয়া : শায়খ আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আস সাদহান)

আনাস ইবনে মালেক (রা) থেকে বর্ণিত, আবু মূসা আশ আশআরী (রা) বললেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম, আমি একটি পাহাড়ের কাছে গেলাম। দেখলাম, পাহাড়ের উপরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রয়েছেন ও পাশে আবু বকর (রা)। আবু বকর (রা) তার হাত দিয়ে ওমর (রা) এর দিকে ইশারা করছেন। আমি আবু মূসা (রা) এ স্বপ্নের কথা শুনে বললাম, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন। আল্লাহর শপথ! ওমর (রা) তো মারা যাবেন! আচ্ছা আপনি কি বিষয়টি ওমর (রা) লিখে জানাবেন?

আবু মূসা (রা) বললেন, আমি ওমর (রা) তার জীবদ্দশায তার নিজের মৃত্যু সংবাদ জানাব, এটা কি করে হয়? এর কয়েকদিন পরই স্বপ্নটা সত্যে পরিণত হল। ওমর (রা) শহীদ হয়ে গেলেন। কারণ, মৃত্যু পরবর্তী সত্য জগত থেকে যা আসে, তা মিথ্যা হতে পারে না। সেখানে অন্য কোনো ব্যাখ্যা দেয়ার সুযোগ নেই। (আল কাওয়ায়েদুল হুসনা ফী তাবীলির রুইয়া : শায়খ আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আস সাদহান)

তাই মৃত ব্যক্তিকে স্বপ্নে দেখলে সর্বাবস্থায় জরুরিভাবে তাদের জন্য দো‘আ ও ছাদাক্বা করা উচিত। মানুষের স্বপ্ন তিন ধরনের হয়ে থাকে (ক) ভাল স্বপ্ন- যা আল্লাহর পক্ষ থেকে সুসংবাদ বহন করে (খ) শয়তানের পক্ষ থেকে- যা মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলে (গ) নিজের খেয়াল ও কল্পনা- যা স্বপ্নে দেখা যায় (মুসলিম হা/২২৬৩)।

স্বপ্নে ভাল কিছু দেখলে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবে। চাইলে অন্যকেও সে বিষয়ে অবহিত করবে। আর খারাপ কিছু দেখলে শয়তান থেকে আশ্রয় চাইবে, বাম দিকে তিনবার আঊযুবিল্লাহ বলে থুক মারবে এবং পার্শ্ব পরিবর্তন করবে। কাউকে সে বিষয়ে বলবে না (বুখারী হা/৭০৪৫)।