Monday, August 01, 2016

গল্প-৩

এক সুন্দরী বিক্রয়কর্মী, অফিস সহকারী ও তাদের পরিচালক অফিস বিরতীতে একত্রে মধ্যাহ্নভোজে বেড়িয়েছে। পথে হঠাৎ এক প্রাচীন তৈল প্রদীপ পড়ে থাকতে দেখতে পায়, স্বভাবগতভাবে বিক্রয়কর্মী অতি উৎসাহের সাথে এগিয়ে কিছু না ভেবেই আলতো করে পাশে লেগে থাকা ধুলা হাত দিয়ে মুছতে থাকে।
বিশাল এক দৈত্য বেড়িয়ে এল …
দৈত্য: আমি তিনটি ইচ্ছা পূরনে সক্ষম, তবে তোমরা তিনজন হওয়াতে প্রত্যেকে একটা করে ইচ্ছা প্রকাশ কর।
বিক্রয়কর্মী: আমি প্রথম … প্লিজ, … আমি বাহামা যেতে চাই, জগৎ সংসারের সকল চিন্তা ভুলে সমুদ্রস্হানের স্বাদ পেতে চাই।
…. ছুহ … … নিমেশে অদৃশ্য হয়ে গেল
অফিস সহকারী: এবার আমি, আমি হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের সমুদ্রতটে যেতে চাই সাথে থাকবে পছন্দের ম্যাসেজ, অফুরান পিনা কলোডাস ও আমার প্রিয়তমা …
… শেষ হবার সাথে সাথে … ছুহ … অদৃশ্য …
দৈত্য: এবার তোমার পালা (পরিচালক এর দিকে তাকিয়ে)
পরিচালক: (একটু বিরক্তির সাথে ভ্রু কুচকে) অফিসের মধ্যাহ্নভোজের বিরতী শেষ হবার সাথে সাথে আমার দুইজনকে একসাথে অফিসে দেখতে চাই।

মোরাল অব দ্যা ষ্টোরী …
প্রথম মতামতটা বসের জন্যে সংরক্ষিত রাখুন।

গল্প-২

চমৎকার রোদ্দজ্বল সকালে নিজ গর্তের একটু সামনে এক ছোট খরগোশ চোখের সামনে এক ভারী চশমা লাগিয়ে টস-টকাশ-টস … টস-টকাশ-টস করে পুরানো এক টাইপরাইটারে শব্দ করে চলেছে।
শব্দে আগ্রহী হয়ে সকালে হাঁটতে বের হওয়া নিঃসংগ শিয়াল এগিয়ে এল …
শিয়াল: কিরে ব্যটা, সাত-সকালে এমন পথের মাঝে কি করছিস?
খরগোশ: (গম্ভীর গলায়) আহা বিরক্ত করনা, আমি একটা থিসিস এর উপর কাজ করছি।
শিয়াল: (একটু আগ্রহী গলায়) হুম … তা কিসের উপর থিসিস?
খরগোশ: আমি লিখছি কিভাবে খরগোশ শিয়াল খায়।
শিয়াল: (হাসতে হাসতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল) ওরে, এতো মহা আহম্মকও জানে খরগোশের শিয়াল ধরা কেন শিয়ালের দিকে তাকাতেও সাহস লাগে।
খরগোশ: তবে চল ঝোপের পিছনের আমার বাসায়, তোমায় প্রমান দেখাই।
মিনিট ১৫ পর …
খরগোশ হাতে করে শিয়ালের একটা হাড় চাটতে চাটতে ফিরলো এবং পুনরায় অসমাপ্ত লেখা এগিয়ে নিয়ে চলল।
খানিক পর একাকি এক নেকড়ে দেখতে পেল খরগোশের কঠোর পরিশ্রম, আগ্রহী হয়ে এগিয়ে এল …
নেকড়ে: কি এতো মনযোগ দিয়ে লিখছ?
খরগোশ: আমি একটা থিসিস তৈরি করছি, কিভাবে খরগোশ নেকড়ে খেতে পারে।
নেকড়ে: (কিছুটা বিরক্ত হয়ে) তুমি এভাবে সময় অপচয় করছ, তুমি মনে কর কেউ তোমার এই থিসিস প্রকাশ করবে!!!
খরগোশ: তোমার অস্বাভাবিক মনে হলে চল আমার বাসায় প্রমান দেখিয়ে দেই।
দুজনে খরগোশের গর্তের পথ ধরল, আগের মতো ১৫ মিনিট পর খরগোশ একা ফিরে এসে আবার টাইপরাইটারে মনযোগী হলো।
এবার এক ভাল্লুক জানতে চাইল: কি করছ?
খরগোশ: আমি থিসিস লিখছি কিভাবে খরগোশ ভাল্লুক খায়।
ভাল্লুক: তুমি কিছু একটা করছ এটা ভাল; কিন্তু বিষয়টা অসম্ভব।
খরগোশ: আহা, তবে চল আমার বাসায় তোমায় প্রমান দেখিয়ে আনি।
যখনি দুজনে গর্তে প্রবেশ করল, খরগোশ হাসিমুখে ভাল্লুকের সাথে গর্তে অপেক্ষমান সিংহের পরিচয় করিয়ে দিল … অতঃপর … …
মোরাল অব দ্যা ষ্টোরী …
তোমার থিসিস এর বিষয় কতটা অযোক্তিক বা হাস্যকর এটা মুখ্যবিষয় নয়, মুখ্যবিষয় কে তোমার সুপারভাইজর, এই বিষয়ে তোমায় সহায়তা করছে এবং বিষয়টা সে পছন্দ করছেন কিনা।
(তোমার কর্মদক্ষতার প্রদর্শনী চাইতে বিবেচ্য বিষয় তুমি বসের সুনজরে তো?)

গল্প-১

প্রচন্ড ঝড়ে ডুবে যাওয়া এক জাহাজের নাবিক অনেক কষ্টে কাঠের উপর ভাসতে ভাসতে এক বিছিন্ন দ্বীপে পৌছাল।বেশ খানিক পর্যবেক্ষনের পর নিশ্চিত হলেন দ্বীপে দ্বিতীয় কোন জনমানব নাই এবং এর দৃষ্টি সীমার মধ্যে অপরকোন স্হলভূমি নাই।
নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যে খাবার খুজতে বের হয় এবং এখান থেকে দ্রুত উদ্ধারের উপায় সন্ধান করতে থাকল।
এক সপ্তাহ পর …
মোটামুটি মাথা গোঁজা যায় এমন একটা পাতা দিয়ে ছাউনি গড়ে তুলেছে, বেশকিছু বনজ ফল ঘরে এনে রেখেছে, রাতের অন্ধকার দুর করার জন্যে আগুন এর ব্যবস্হা করেছে এক কথায় নিজেকে মানিয়ে নেবার প্রস্তুতি সম্পন্ন।
হঠাৎ একদিন …
বিকালে তার ছাউনিতে ফিরে দেখে দুপুরের জ্বালানো চুলার আগুন যেকোনভাবে ছাউনিতে ছড়িয়ে গেছে এবং আগুন প্রায় সবকিছু শেষ করে দিয়েছে।
সমুদ্রতীরে অসহায় নাবিক নিজ ভাগ্যের প্রতি কুটুক্তি করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে গেল।
সন্ধা ছুইছুই … …
নাবিক এর কাছে স্বপ্নের মতো ঝাপসা ভাবে মনেহচ্ছে বেশকিছু মানুষ তাকে টেনে তুলবার চেষ্টা করেছে। একটু থিতু হবার পর বুঝতে পারল আসলেই মানুষ তাকে ঘিরে আছে এবং তারা তাকে একটি জাহাজে তুলে নিল এবং নাবিককে অসহায় এর মতো এদিক ওদিক তাকাতে দেখে জাহাজের কাপ্তান প্রশ্ন করল- আপনি উদ্ধারের জন্যে স্মোক সীগনাল দেন নাই?
.
.
মোরাল অব দ্যা ষ্টোরী …
আমরা যখন অসহায় ভাবে যাকে মনেকরি দুভাগ্য প্রকৃতপক্ষে সেটা আল্লাহ্ এর আমাদের প্রতি অনুগ্রহ হয়ে থাকতে পারে।

তুমি যে আছো বলেই

তুমি যে আছো বলেই
জোনাকি জ্বালে বাতি
মাখামাখি জোসনায়
চাদনী আলোয় মাতি

তুমি যে আছো বলেই
সুবে-সাদিকেই শুরু দিন
ভোরের বাতাশে তানপুরা
বেহাগে শিক্ত হয় জমিন

তুমি যে আছো বলেই
দুপর রোদে তাপে তপ্ত
দরজা জানালা দিয়ে
লু হাওয়া শরীর উন্মুক্ত

তুমি যে আছো বলেই
বিকেল হয় স্নিগ্ধ মাখা
চোখে চোখে ভালবাসা
আলতো হাতে হাত রাখা

তুমি যে আছো বলেই
আমিতে আছি প্রতিক্ষণ
আছে আগামি প্রতিশ্রুতি
আসবে আর একটা দিন