Saturday, April 03, 2021

মহিমান্বিত কদরের রাত

তালমুদ তথা ইহুদী ধর্মাতিহাসে আছে, এক বুড়ি মুসা (আঃ) কাছে আসেন, অতপরঃ বলেন হে মুসা, আপনি আমার অসুস্থ সন্তানের জন্য দোয়া করুন। মুসা (আঃ) প্রশ্ন করেন, বুড়ি মা, আপনার সন্তানের বয়স কত? বুড়ি বলল প্রায় ৯৩০ বছর। মুসা (আঃ) বলেন, হে বুড়ি মা, আপনার সন্তান অনেক অনেক বছর হায়াত পেয়েছেন। আপনি আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন কারন এমন একটা জামানা আসবে যখন মানুষ ৬০-৬৫ বছর বাঁচতে পারাটাকে সৌভাগ্য মনে করবে। বুড়ি মুসা (আঃ) থেকে দোয়া নিয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর মনে কিছু প্রশ্নের উদয় হল, ফলে তিনি আবার মুসা (আঃ) কাছে ফিরে প্রশ্ন করলেন।
- হে মুসা কি লাভ হবে সে জাতির, যার কথা আপনি বললেন? কম বয়সের কারনে তাদের সন্তান সন্তুতির অভাবে তারা দুনিয়া থেকে সহসাই বিলীন হয়ে যাবে? মুসা (আঃ)বলেন, না বুড়ি মা, তাদের এত সন্তান হবে, দুনিয়াতে তাদের থাকার জায়গার সমস্যার কারনে তারা দুনিয়ার সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়বে।
- বুড়ির আবারো প্রশ্ন হে মুসা, তারা যদি পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়েই পড়ে তাহলে কোথায় তারা বাসস্থান বানাবে? বানানোর আগেইতো তাদের মৃত্যু হবে? মুসা (আঃ) বললেন, বুড়ি মা, সে জামানার মানুষ বড় বড় উঁচু দালান অনেক কম সময়ে বানাতে পারবে, যা পৃথিবী কখনও ইতিপূর্বে প্রত্যক্ষ করেনি।
- বুড়ির আবারো প্রশ্ন করেন হে মুসা, তারা যদি পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকবে এবং তাদের সন্তানদের থাকার যায়গাই যদি না হয় তাহলে তারা খাদ্যাভাবে মারা যাবে। মুসা (আঃ) বলেন, বুড়ি মা তা হবে না, কারন তখন গাছ পালা প্রচুর পরিমানে উৎপাদন দিবে, গাছপালা বছরে দু-তিন বার ফসল দিতে থাকবে এবং ফসলের আকৃতি হবে বড় ধরনের।
- বুড়ির আবারো প্রশ্ন করেন হে মুসা, ঠিক আছে বুঝলাম, আমরা বেশী বয়স পেয়ে পৃথিবীতে যেভাবে ঘুরতে পারছি, দেখতে পারছি তারা কম বয়স প্রাপ্ত হয়ে পৃথিবীর কিছুইতো দেখার সৌভাগ্য পাবেনা? তাদের জীবনে কি ফায়দা হবে? মুসা (আঃ) বলেন, আপনার ধারনা ঠিক নয় বুড়ি, তারা এমন এমন যানবাহন তৈরী করবে, যদ্ধারা আমাদের এক মাসের পথ তারা একদিনে ভ্রমন করবে। তারা যখন যেখানে ইচ্ছা জলে, স্থলে, আকাশে, অন্তরীক্ষে ঘুরে বেড়াবে। দুনিয়ার এমন কোন জায়গা থাকবে না যেখানে তারা পৌঁছতে পারবেনা।
- বুড়ি অনেক্ষন ধরে ভাবলেন অতপর বললেন, মুসা আপনি যত কথাই বলুন না কেন, যত সুযোগের কথা বলেন না কেন অন্তত একটি ব্যাপারে সে জাতি আমাদের সমকক্ষ হতে পারবেনা। তাহল আমরা হাজার বছর বয়স পেয়ে যে ছওয়াব অর্জন করেছি তারা ৬০ বছর বয়স দিয়ে সে পরিমান ছওয়াবের ভাগী হতে পারবেনা। এটাও বা কম কি? মুসা (আঃ) বলেন, বুড়ি মা তোমার সকল চিন্তাই ভূল, কারন সে জামানার মানুষের জন্যে আল্লাহ একটি বিরাট সু-সংবাদ রেখে দিয়েছেন। তা হল, তাদের এমন একটি মহিমাম্বিত রাত দেবেন সেটার মর্যাদা হবে আমাদের পুরো জীবনের চাইতেও সেরা। তারা প্রতিবছর সে রাত ব্যবহার করে আমাদের চাইতে অনেক অনেকদূর এগিয়ে যাবে, আমরা তাদের পিছনে থাকব। একথা শুনে বুড়ি মাথায় আঘাত করছেন আর গড়াগড়ি খাচ্ছেন, তিনি বিলাপ করছেন একথা বলে, কেন আল্লাহ আমাকে সে জমানায় পাঠালেন না। আমি কত ভাগ্য বিড়ম্বিত মহিলা। হায় হায় আমার কি হবে, আমার কি হবে। 

সুপ্রিয় মুসা (আঃ) বুড়ি যে ভাগ্য বিড়ম্বনার জন্যে দিনের পর দিন কেঁদেছেন,সে রাত সামনে সমাগত। সে রাত আমাদের ডেকে ডেকে ফিরে যায়,কারন আমরা সবাই মোহে আছি। আসুন আমরা জেগে উঠি সে রাতের সন্ধান করি রমজানের শেষ ১০ দিনের বেজোড় রাত গুলোতে।