Monday, August 01, 2016

গল্প-২

চমৎকার রোদ্দজ্বল সকালে নিজ গর্তের একটু সামনে এক ছোট খরগোশ চোখের সামনে এক ভারী চশমা লাগিয়ে টস-টকাশ-টস … টস-টকাশ-টস করে পুরানো এক টাইপরাইটারে শব্দ করে চলেছে।
শব্দে আগ্রহী হয়ে সকালে হাঁটতে বের হওয়া নিঃসংগ শিয়াল এগিয়ে এল …
শিয়াল: কিরে ব্যটা, সাত-সকালে এমন পথের মাঝে কি করছিস?
খরগোশ: (গম্ভীর গলায়) আহা বিরক্ত করনা, আমি একটা থিসিস এর উপর কাজ করছি।
শিয়াল: (একটু আগ্রহী গলায়) হুম … তা কিসের উপর থিসিস?
খরগোশ: আমি লিখছি কিভাবে খরগোশ শিয়াল খায়।
শিয়াল: (হাসতে হাসতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল) ওরে, এতো মহা আহম্মকও জানে খরগোশের শিয়াল ধরা কেন শিয়ালের দিকে তাকাতেও সাহস লাগে।
খরগোশ: তবে চল ঝোপের পিছনের আমার বাসায়, তোমায় প্রমান দেখাই।
মিনিট ১৫ পর …
খরগোশ হাতে করে শিয়ালের একটা হাড় চাটতে চাটতে ফিরলো এবং পুনরায় অসমাপ্ত লেখা এগিয়ে নিয়ে চলল।
খানিক পর একাকি এক নেকড়ে দেখতে পেল খরগোশের কঠোর পরিশ্রম, আগ্রহী হয়ে এগিয়ে এল …
নেকড়ে: কি এতো মনযোগ দিয়ে লিখছ?
খরগোশ: আমি একটা থিসিস তৈরি করছি, কিভাবে খরগোশ নেকড়ে খেতে পারে।
নেকড়ে: (কিছুটা বিরক্ত হয়ে) তুমি এভাবে সময় অপচয় করছ, তুমি মনে কর কেউ তোমার এই থিসিস প্রকাশ করবে!!!
খরগোশ: তোমার অস্বাভাবিক মনে হলে চল আমার বাসায় প্রমান দেখিয়ে দেই।
দুজনে খরগোশের গর্তের পথ ধরল, আগের মতো ১৫ মিনিট পর খরগোশ একা ফিরে এসে আবার টাইপরাইটারে মনযোগী হলো।
এবার এক ভাল্লুক জানতে চাইল: কি করছ?
খরগোশ: আমি থিসিস লিখছি কিভাবে খরগোশ ভাল্লুক খায়।
ভাল্লুক: তুমি কিছু একটা করছ এটা ভাল; কিন্তু বিষয়টা অসম্ভব।
খরগোশ: আহা, তবে চল আমার বাসায় তোমায় প্রমান দেখিয়ে আনি।
যখনি দুজনে গর্তে প্রবেশ করল, খরগোশ হাসিমুখে ভাল্লুকের সাথে গর্তে অপেক্ষমান সিংহের পরিচয় করিয়ে দিল … অতঃপর … …
মোরাল অব দ্যা ষ্টোরী …
তোমার থিসিস এর বিষয় কতটা অযোক্তিক বা হাস্যকর এটা মুখ্যবিষয় নয়, মুখ্যবিষয় কে তোমার সুপারভাইজর, এই বিষয়ে তোমায় সহায়তা করছে এবং বিষয়টা সে পছন্দ করছেন কিনা।
(তোমার কর্মদক্ষতার প্রদর্শনী চাইতে বিবেচ্য বিষয় তুমি বসের সুনজরে তো?)

No comments: