Tuesday, December 08, 2015

আমজনতার মঞ্চ


বাংলাদেশিরা বড্ডো বোকা। বোকারা গুইসাপ দেখলেই মা-পদ্মা বলে। উন্নতির নামে যে হৈচৈ করেছে বাকশাল স্টেট, একমাত্র জন্তুজানোয়ারদেরই অর্থনীতির খবর রাখার প্রয়োজন নেই। অর্থনীতিতে যে ধ্বস, ক্ষমতায় রাখার গ্যারান্টি দিয়ে যেভাবে লুটপাট করে যাচ্ছে বিদেশিরা, যেভাবে ভারতীয়দের জাহাজ নোঙর করতে শুরু করেছে... উন্নতির ডামাডোলে অন্তত আমাকে বোকা বানানো যাবে না। উন্নতির প্রমাণ থাকতে হবে পরিসংখ্যানে, ব্যক্তির মুখের কথায় নয়। একমাত্র জন্তুজানোয়ারদের দেশেই রাস্তাঘাটে মাইক আর বিলবোর্ড দিয়ে উন্নতি প্রচার করে মন্ত্রী-এমপিরা, অর্থনীতি সম্পর্কে যাদের শূন্য জ্ঞান। বিলবোর্ডে উন্নতি প্রচার একমাত্র জন্তুজানোয়ারদের কাজ। সুতরাং আমি নিশ্চিত যে, এই দেশের মানুষেরা এখনো গরু-গাধার সীমানা অতিক্রম করেনি। তাই প্রতিদিনই নিজের শোয়ার ঘরে আগুন দিয়ে আলুপোড়া খাচ্ছে।
প্রতিদিনই নতুন নতুন উন্নতির খবরে হাঁপিয়ে উঠেছি। ৩৫ বছরে আমেরিকাতে যতো উন্নতি, মনে হচ্ছে, এক বছরেই করে ফেলতে চায় বাংলাদেশ। আজ এই করবো, কাল সেই করবো, বিশ্বের ৩য় উঁচু ভবন হবে বাংলাদেশেই। শুধুই কি তাই? উঁচু ভবনকে ঘিরে তুলকালাম পরিকল্পনা যেন সত্যিই আমরা ধনী দেশ। অথচ বাস্তবে যা-তা। গণতন্ত্রের কবরের উপর জেগে উঠবে মেট্রোরেল, ৩য় উচ্চতম ভবন, পদ্মাসেতু, মুজিব স্যাটেলাইট, কর্ণফুলির তলে ট্যানেল, বাংলাদেশে চীনের সাবমেরিন ঘাঁটি ইত্যাদি।
৩য় বৃহত্তম উঁচু ভবনের সংবাদ ঘেটে চক্ষু চড়কগাছ। ইত্তেফাক সেটা ইচ্ছা করেই লুকিয়ে গেছে কারণ এখানেও দাদাদের গন্ধ। ইত্তেফাক লুকিয়ে গেছে ড. কালি প্রদীপ চৌধুরি নামক ব্যবসায়ীর কথা, যাকে এই ভবনটি তৈরির টোপ দিয়েছে অর্থমন্ত্রী। ইত্তেফাক লুকিয়ে গেছে, ১৬ বছর বয়সে কালিপদ ভারতে লেখাপড়া, এরপর মালয়েশিয়া হয়ে যুক্তরাষ্ট্র। কেন কালিপদর কথা লেখেনি? টাটার মতোই ভারতে এই লোকের বিশাল ব্যবসা। অতীতেও সাহারা গ্রুপ একই টোপ ফেলেছিলো। আসুন আমরা উন্নতির কবরে ঢুকে বাংলাদেশের শবের উপর দাঁড়িয়ে রক এণ্ড রোল পেটাই।

এবার ছেড়ে দে! কবরে বুড়াদে এক পা। এইসব বুড়াধুরাদের নিয়ে কেন টানাটানি? কেন ইস্রায়েল-ফিলিস্তিনের মতো রক্তপাত? ফাঁসি দিতে দিতে এমন কলংকমুক্ত করে ফেলেছে, সারা বিশ্বে ছিঃ ছিঃ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর চোখে কিছুই পড়ে না। আলকাতরার মতো কালো কলংকে ঢেকে গেছে রাধা-রানীর গৌরবর্ণ দেহ। আমি বলবো, এইসব বলির পাঠাদেরকে ছেড়ে দে মা।
কালিপূজায় হিন্দুরা পাঠা বলি দেয়। বাংলাদেশেও স্বাধীনতা দিবসগুলোর আগে একটা করে পাঠা বলি। এবার আসিতেছে ১৬ ডিসেম্বরে পাঠা নিজামী। এদিকে মামা-ভাগ্নে কোম্পানির সিইও মুনতাসির মামুন বেজায় চটেছে। চটেছে ইমরান সরকারও। শাহারিয়ার কবির তো সব সময় চটেই থাকে। মনে হয় এরা পা উপরে মাথা নিচে, না হলে এইসব কথা কেউ বলে? সকলেই খারাপ, আমি একাই ভালো, এটাই এখন প্রচলিত বেদ।
মামা-ভাগ্নে কোম্পানির দাবি পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক কাট। ওলামা, মাশায়েক আর পুলিশের দাবি, জাকের নায়েক জঙ্গি ছড়াচ্ছে পিস টিভি কাট। হাসিনার দাবি, জামায়েত জঙ্গি দল, নিবন্ধন কাট। আমি বলবো, ১০০ হাজার যুদ্ধাপরাধী সৈন্য আর ১৯৫ জন হিটলারকে বেকসুর খালাস দিয়ে সাকাদের ফাঁসির মধ্যে অবশ্যই বাংলাদেশকে কলঙ্কমুক্ত করার ন্যূনতম যুক্তি নেই। বরং বিরোধী নেতাদেরকে একটার পর একটা ফাঁসি। একথা এখন পরিষ্কার বলছে বিদেশিরাও। বিরোধীনেতাদেরকে ফাঁসি দিয়ে দেশটাকে উপনিবেশ বানানোর মাধ্যমে ৭৫এর মতোই আরেকবার আমৃত্যু ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা। জন্তুজানোয়ারেরা যত্রতত্র মল ত্যাগ করে, মানুষ করে নির্দিষ্ট জায়গায়। বলবো, পুঁজার আগে একটা করে বলির পাঠা না বোঝার মতো বোকা আমি নই।
বুদ্ধিহীনরা কথায় কথায় ন্যূনেমবার্গ ট্রায়ালের উদাহরণ দিচ্ছে কিন্তু মানুষগুলো এতো বেশি জন্তুজানোয়ার যে, উচিত জবাব দেয়ার মতো একটি কথাও বলতে শেখেনি। বিরোধীদল নয় বরং গাধাদের অভয়াশ্রম। নিরাপদে থাকতে হলে ২০ দলে যোগ দেও। আসল কথা, ন্যূরেমবার্গ নিয়ে বিশাল ধোকা। আমার সঙ্গে হাঁটুন। দেখুন, ২য় বিশ্বযুদ্ধে জাপান এবং ঠান্ডাযুদ্ধে কোরিয়া, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়ার উদাহরণ। ভিয়েতনামে দিনে ৫০০ টন বোমা ফেলতো নিক্সন। হিরোশিমা-নাগাসাকিতে বোমা মেরে আজো কলংকিত আমেরিকা। কোরিয়া ও কম্বোডিয়ায় কম্যুনিস্ট মেরে সাফ করে দিয়েছিলো আমেরিকা। আমেরিকার ঠান্ডাযুদ্ধ আর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ একই সময়ের কথা।
এখও যদি বাংলাদেশিদের চোখ-কান না খোলে, বাকশালী স্টেটের মতো জঙ্গিবাদি দলের ষড়যন্ত্রে এই দেশ চলে যাবে অন্য দেশের হাতে। আব্বাস আর গাবগাছ এক নয়। লাল-সবুজ পতাকা হলেই বাংলাদেশ হয় না। তাকিয়ে দেখুন বাংলাদেশে আজ কাদের ভিড়? হিসাব করুন, কিহারে মুদ্রা নিয়ে যাচ্ছে ভারতীয়রা। বস্তায় বস্তায় সোনা আর ড্রামে ড্রামে ফেনসিডিল। সীমান্ত খুলে দেয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশকে বানিয়েছে ভারতীয় মাফিয়াদের জন্য আন্তর্জাতিক চোরাচালানের ঘাঁটি। আজ ভারতের ষড়যন্ত্রেই কথায় কথায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জিহাদ। পাকিস্তান ৭১এ এই করেছে, ওই করছে, যেন গলাবাজি করে নিন্দা করলেই পুরষ্কার পাওয়া যাবে। তাই যে যতো জোরে পারছে, বলছে, পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক কাট। আসলেই কি তাই?
২য় বিশ্বযুদ্ধ এবং ঠান্ডা যুদ্ধে আমেরিকার নিষ্ঠুর ভূমিকার পরেও- জাপান, কোরিয়া, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া কি আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক কাট করেছে? বন্দি যুদ্ধারপরাধীদেরকে নিজামী, সাকাদের মতো ঝটপট ফাঁসি দিয়েছে? নাকি ফেরত দিয়েছে? এছাড়াও রয়েছে মেন্ডেলার উদাহরণ, যে নাকি সবাইকে ক্ষমা করে দিয়ে সামনে তাকাতে বলেছিলেন। বরং আমি বলবো, পুঁিটমাছ দিয়ে যেমন কোরমা হয় না, একপয়সার বুদ্ধি দিয়ে রাষ্ট্র চালানো যায় না। তাকিয়ে দেখুন, জাপান, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়ার দিকে। দেখুন, হোয়াইট হাউজের সঙ্গে তাদের কি সম্পর্ক। বরং সব জানার পর একটি কথাই বলবো, বাংলাদেশ নয়, যদি কারো কলংকমুক্ত হওয়ার প্রয়োজন থাকে, সেটা জাপান, ভিয়েতনাম, কোরিয়া। কারণ মার্কিনীরা ওইসব দেশগুলোতে বছরের পর বছর যুদ্ধ বাঁধিয়ে রেখে যে পরিমাণ গণহত্যা করেছিলো... সিনজো আবে অর্থাৎ জাপানের প্রধানমন্ত্রী নিজমুখে ওবামাকে বললেন, আমরা অতীত ভুলে যেতে চাই। মার্কিন প্রেসিডেন্টরাও ওইসব দেশে গেলে গোরস্তানে ফুল দেয়। অতীত ভুলে যাওয়ার মাধ্যমে সত্যি সত্যিই কলংকমুক্ত হয়েছে জাপান, ভিয়েতনাম...।
আরো একটি কথা। ন্যূরেমবার্গ ট্রায়াল আমার মুখস্ত। হিটলারের গণহত্যার জন্য চাক্ষুস সাক্ষির প্রয়োজন ছিলো না। দেশজুড়েই গণহত্যার বদ্ধভূমি। ইহুদিদেরকে নাৎসীরা যেভাবে হত্যা করেছে বরং ফাঁসি না দিলেই ভিকটিমদের প্রতি অবিচার করা হতো, যে প্রমাণ দিতে পারবে না বাংলাদেশ। সাজানো নাটক নিয়ে আর কতো বলবো! যারাই কলংকমুক্ত করার ঢোল পেটাচ্ছে, তারা বিরোধিদলকে নিশ্চিহ্ন করছে। গণহত্যার কোন রকম দালিলিক প্রমাণ ছাড়াই গণহত্যা, গণহত্যা বলে চেঁচাচ্ছে। বড় বেশি বিরক্ত বোধ করছি। কলংকমুক্ত করতে গিয়ে এমন অবস্থা, বিদেশিরা এখন গার্মেন্টস শিল্প নিয়ে যাচ্ছে ভিয়েতনামে। আমি বলবো, পুঁজার সময় পাঠা বলি দেয়া বন্ধ করা হোক।

আমি মনে করি, যদি একটা দেশের সঙ্গেও সম্পর্ক কাট করতে হয়, সেটা চীন। চীন এমনই একটি জন্তু, যাকে কোনকিছু দিয়েই চেনা যাবে না। ৭১এ চীনের কোন ভেটো পাওয়ার না থাকায়, নিক্সনের হস্তক্ষেপে নিরাপত্তা পরিষদে সদস্য করার মাধ্যমে ৭১এর বিরুদ্ধে ভেটোর ব্যবস্থা করলো আমেরিকা। এরপর স্বাধীনতার প্রশ্ন এলেই ভেটো দিয়েছে চীন-আমেরিকা। যুদ্ধের সকল অস্ত্র সরবরাহ করেছে চীন। চীন অস্ত্র সরবরাহ না করলে, পাকিস্তানের সেই ক্ষমতা ছিলো না। নিউইয়র্কে চীনা দূতাবাসের ভেতরে অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করতো পাকিস্তান-চীন-আমেরিকা। একমাত্র জন্তুজানোয়ারেরাই এইসব খবর রাখে না কিন্তু স্বাধীনতা স্বাধীনতা বলে চেঁচায়। ৭৪এর দুর্ভিক্ষের অন্যতম পার্টি চীন। গণবাহিনী, চীনাবাহিনী, মুজিববাহিনী সবগুলাকেই নকশাল পার্টি বানিয়েছিলো চীন। মুক্তিযুদ্ধ পছন্দ করেনি তাই এদের হাতে অস্ত্র এবং ট্রেনিং দিয়ে জনজীবনে নাভিশ্বাস তুলেছিলো চীন। মুজিব হত্যার পরোক্ষ পার্টিও চীন, বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিলো ১৬ আগষ্ট ১৯৭৫। আরো বলতে হবে?
এবার বলুন, বাংলাদেশকে কলংকমুক্ত করতে হলে কার সঙ্গে সম্পর্ক কাট করতে হবে? উল্টা চীনের পেটের ভিতরে ঢুকে গেছে বাংলাদেশ আর পাকিস্তানকে কাট? আমি এদেরকে জগৎশেঠ ছাড়া আর কিছুই বলবো না।

ওলামা মাশায়েক, পুলিশ নামের আলাল-দুলালদের আবদার এবার পিস্‌ টিভি বন্ধ করুন। কারণ? জাকের নায়েকের লেজে জঙ্গি খুঁজে পেয়েছে তাই লাগাও আগুন। খেয়ে ফেললো ইটিভি, আমার দেশ, দিগন্ত টিভি... এবার দখল করবে পিস্‌ টিভি। আসিতেছে এনটিভি এবং বাংলাভিশন। ফেইসবুক, ভাইবার, ট্যাংগো সবকটার লেজে আগুন দিয়েছে। সবাই খারাপ খালি আমিই ভালো। পিস্‌ টিভিতে জঙ্গি কিন্তু স্টারজলসায় মথুরা বৃন্দাবন। যেন ভারতীয় সিরিয়ালগুলো দেখে ঘরে ঘরে তৈরি হচ্ছে চরিত্রবতী নারী এবং ধোয়া তুলসিপাতা পুরুষ। যেন ভারতীয় সিরিয়ালগুলোর কারণে একটার পর একটা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে গণিকালয়। আমি বলবো, ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি। সবাই জঙ্গি একমাত্র বাকশালীস্টেট বাদে। সবাই খারাপ একমাত্র বাকশালীরা বাদে। সব টিভি বন্ধ, চলবে ভারতীয় চ্যানেল। জন্তুজানোয়ারদের জন্য টলয়েটের প্রয়োজন হয় না, হয় মানুষের জন্য।

প্রেক্ষাগৃহে আবার মুক্তি পাচ্ছে নিশা দেশাই। এতোবার ফ্লপ করেও এই নায়িকার শিক্ষা হলো না। হবে কেন? চিত্রপরিচালক ওবামার নেতৃত্বে সত্যিসত্যিই আমেরিকা একটি ভোতা দেশে। ভালো ছবি সম্পর্কে চিত্র পরিচালক ওবামার ন্যূনতম জ্ঞান নেই কিন্তু জোর করেই ছবি মুক্তি দেবে আর সঙ্গে সঙ্গে ফ্লপ। ওবামার নেতৃত্বে আমেরিকা সারা বিশ্বজুড়েই ফ্লপ। পিওন দিয়ে যেমন পোস্ট অফিস চলে না, সারেংগি শুনলে জঠরজ্বালাও মিটবে না। আবার মুক্তি পাচ্ছে নিশা দেশাই নামের দুইআনার মন্ত্রী ছবি। এরা যে কেন এতো বোকা হয়ে গেলো, মাথায় ধরে না। দেখেছি রেগ্যান, ক্লিন্টন, বুশের আমেরিকা। এই আমেরিকা এখন বাংলাদেশ। মন্ত্রী-এমপিরা কথা বলে বাংলাদেশের জন্তুজানোয়ারদের মতোই। যেমন কথার কোন মূল্য নেই, তেমনিই সারাক্ষণ একপক্ষকে লেজে আগুন দেয়া ছাড়া কাজ নেই। রিপাবলিকান আর বিএনপির একদশা। ডেমোক্রেট আর বাকশালীস্টেটের একরকম। দুইআনার মন্ত্রীরা আবারো লোক হাসাবে। এবার দুইআনার বদলে একআনা হবে। গোপালভাড় বেঁচে থাকলে লজ্জা পেতো। এই আমেরিকা অপরিচিত। বার্ণিকাট একটা কমেডিয়ান, গিবসন একটা জোকার, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত আর ভোদাই জগা এক টাইপের। মার খাচ্ছে পশ্চিমারা। জিতে যাচ্ছে চীন, জাপান, রাশিয়া, ভারত। লোক হাসাতে আবারো আসছে নিশা দেশাই। আসল কথা, অতীতের আমেরিকা দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে। এদেরকে ধরেছে আওয়ামী লীগের রোগে।

তুমুল প্রপাগান্ডর ঝড় তুলেছে বাকশালীস্টেট। এমন দিন নেই যখন একটি প্রপাগান্ডা নেই। এই হচ্ছে, সেই হচ্ছে, বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। প্রত্যেকদিন কিভাবে এগিয়ে যাচ্ছে? বাংলাদেশে কি প্রত্যেকদিনই হাত-পা গজায় নাকি সাইজে মোটাতাজা হয়? দুঃখের কথা আর কতো বলবো? সত্যি সত্যিই পশ্চিমের স্বর্ণ দিন শেষ। তা না হলে কেউ কি হাসিনাকে চিন্তাবিদ বলে? তবে কুচিন্তাবিদদের তালিকায় রাখলে সাবাশ দিতাম।
একটি জাতির যে পরিমাণ সর্বনাশ করলো, পশ্চিমের পত্রিকাগুলোই সবচে’ বেশি লিখছে কিন্তু তারপরেও তাকে চিন্তাবিদের খেতাব দেয়ার অর্থ, পশ্চিমারা এখন গোপালভাড়। দেশ চলছে প্রপাগান্ডায়, সিকিমতত্ত্ব বাংলাদেশে, একটার পর একটা ভারতীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান ঢুকে পড়ছে এই দেশে। জগৎশেঠরা বেজায় খুশি, উন্নতির গণসঙ্গীতের পাগলা গারদ, আমরা পড়েছি মহাপাগলদের খপ্পড়ে। বলুন, আমরা সবাই নারায়নগঞ্জের নূর হোসেন।

ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানির মতো, দীর্ঘ ৬ বছর ষড়যন্ত্রের পর লেন্দুপ জর্দিকে ভরণপোষণ করে ভারতের পতাকায় সিকিমকে যোগ করে ছাড়লো ইন্দিরা। দিল্লির কুটকৌশল বোঝার মতো রাজনীতিবিদ নেই। যারাই পাকিস্তানী উপনিবেশের সমালোচনা করে অচিরেই দেখবে দিল্লির উপনিবেশের সাইজ কতো? মোদির রাজনীতি যারা বোঝে না, উচিত বনজঙ্গলে যাওয়া। সুজাতা সিং-কে দিয়ে কি করলো কংগ্রেস? এই দেশের নির্বাচনে উলঙ্গ হয়ে নেমে পড়েছিলো ভারতীয়রা। আমাদের সীমান্ত এখন তাদের, আমাদের রাজনীতিও তাদের। তাই যখন খুশি বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে মানুষ খুন করে চলে যায়। এই বছরে ২৪ জন খুন, ১১ মাসে ৫৬ জন। বিজেবির হাতে একজন ভারতীয়ও খুন না হওয়ার অর্থ কী? এর অর্থ কি দাঁড়ালো?
খবরে প্রকাশ, ইউরোপের রিফিউজি ক্যাম্পে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে বাংলাদেশিরা কিন্তু অবৈধ সরকার টু-শব্দটি করেনি। এবার দেখুন ভারতের বন্যায়, মোদিকে কি বাণী পাঠালো হাসিনা। ভারতের বন্যদূর্গতদের পাশে থাকার জন্য কান্নাকাটি করে মোদিকে চিঠি। ওই চিঠির ভাষা পড়ে আমি থ। অন্তত এর এক চিমটি সমবেদনাও পায়নি রিফিউজি ক্যাম্পের বাংলাদেশিরা। এর মানে হলো, লেন্দুপ জর্দি। লেন্দুপদের কাছে স্বদেশিরা মূল্যহীন, ভারতীয়রা মূল্যবান। কানে ধরে সবকিছু আদায় করে নিলো মোদিভাই। এখন আমাদের আকাশ-বাতাস, স্থলসীমাতে ওদের অবারিত প্রবেশ। যখন খুশি মানুষ খুন করে চলে যায়। বাংলাদেশিরা খুশি কারণ ক্ষমতা চিরন্তন। বাকশালীদের কলেরগান আর জয়হিন্দের জাতীয়গান্ত এক বাঁশিতে। যা বলছিলাম, একথা স্পষ্ট, ভারতে বন্যা হলে কান্নাকাটি করবো, সীমান্তের ভেতরে ঢুকে মানুষ মারলে চুপ থাকবো, প্রত্যুত্তরে কটি গুলিও করবো না। ১১ মাসে ৫৬ জন এবং এই বছর ২৪ জনকে হত্যার জন্য মোদিভাইকে পাঠাবো অভিনন্দনপত্র। সাবাশ বাকশালীদের বাংলাদেশ!

গণগ্রেফতারের সুফল নিয়ে আগেও লিখেছি, আবারো মনে করিয়ে দিচ্ছি। এছাড়া বিরোধীদলের আন্দোলন এগিয়ে নিতে বিকল্প পথ নেই। খালেদা জিয়ার থিংকট্যাংক এখন গুয়েরট্যাংক। রোগে, শোকে, বয়সে কাতর খালেদা। তার কাছ থেকে আশা করা ছেড়ে দিয়েছি। লন্ডনে ২ মাস পার করার পরেও পরিবর্তন নেই। একটার পর একটা ডান্ডা কিন্তু টু-শব্দটি নেই। খালেদা জিয়াকে লাইফ সাপোর্টে বাঁচিয়ে রেখে গেইম থিওরি খেলছে বাকশালীরা।
গেইম থিওরির অন্যতম, কৌশলে প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করা। লক্ষ্য করুন, আমাদের সঙ্গিত, মিডিয়া, শিক্ষাঙ্গন, হাঁচি, বিষফোঁড়া, অশ্বরোগ, চুলকানি, বাসররাত... সবখানেই ৭১। ৭১ কি নূন যে, এছাড়া তরকারি হবে না? স্বাধীন হওয়া প্রতিটি দেশেই ৭১ হয়েছে কিন্তু একমাত্র বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কোন দেশ অতীতে বাস করে। বাংলাদেশের পরে স্বাধীন হয়েছে ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া কিন্তু কখনোই দেখিনি, এরা ঠান্ডাযুদ্ধ নিয়ে সারাক্ষণ নিজেদের মধ্যে প্যাঁচাল পারে আর যুদ্ধ করে। একমাত্র আমরাই সারাক্ষণ ৭১ নিয়ে যুদ্ধ করছি, করেই যাচ্ছি। ৭১এর অশেষ যুদ্ধ ৪৪ বছরেও শেষ হয়নি, বরং বাকশালীরা আমাদেরকে ৭১এই বন্দি রেখে পুঁজি কামাচ্ছে।
মাথা থেকে পা পর্যন্ত, চামড়ার ভেতরে এবং বাইরে, গণিকালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয়, টেলিভিশন থেকে বঙ্গভবন, সর্বত্রই ৭১ আর ৭১এর চিৎকার। এই চিৎকারের সঙ্গে সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে “ইমরান সরকার যাত্রাদল”, “মামা-ভাগ্নে নাটকের দল”, “ড. আনিসুজ্জামন র্যা প মিউজিক ব্যান্ড”... সবাই বলে ৭১, জোরছে বলো, ৭১।
আসল উদ্দেশ্য এইরকম। ৭১-কে ঘিরে যেসকল গোপন ষড়যন্ত্র হয়েছিলো আওয়ামী লীগের সঙ্গে, মানুষ যেন না জানতে পারে, সেইজন্য ৭১এর বোঝা চাপিয়ে দিয়ে জাতিকে সারাক্ষণ ব্যস্ত রাখা। ৭১ ছেড়ে ৭২, ৭৩ কিংবা ২০১৫ সনে পৌঁছে গেলে, এই জাতি জানতে চাইবে গোপন ষড়যন্ত্র। ফাঁস করে দেবে, পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করে বাংলাদেশ দখলের ষড়যন্ত্র। পাকিস্তানকে দুইখন্ড করে এখন যা হচ্ছে, এই পরিকল্পনা ৬৩ সনের আগারতলায়। ৭১এর বাইরে ঢুকতে দিলেই, শিশু সাবালক হবে। সাবালক হলেই জানতে চাইবে তার নাম, ঠিকানা, বংশপরিচয়। এই প্রশ্নের উত্তর সাবালকের বাবা-মা দিতে পারবে না। এর নাম গেইম থিওরি।

১০
আবারো রাষ্ট্রপতির সিঙ্গাপুর যাত্রা? আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। যে রাষ্ট্রপতি টুলে বসে ঈদের নামাজ পড়ে, সেই রাষ্ট্রপতি হেঁটে প্লেনে চড়লে আমার খুব কষ্ট হয়। দেশের রাজনীতিবিদরা কেউ দেশে চিকিৎসা করে না বলে আমার খুব কষ্ট হয়। চিকিৎসকদের উপর রাজনীতিবিদের ঘৃণা এবং অনাস্থা দেখে কষ্ট হয়। আবারো গরিবের টাকায় ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতি। আবারো নিজের দেশের ডাক্তারদের উপর অনাস্থা রাষ্ট্রপতির। আবারো দেশের মুদ্রা বিদেশি ডাক্তারদের হাতে তুলে দেয়া। আবারো গার্মেন্টস কর্মিদেরকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বলা, তোরা ট্রেড ইউনিয়ন করলে আমার খরচ যোগাবে কে? তোরা কাবাব না হলে, আমার চিকিৎসার জন্য বছরে লক্ষ লক্ষ ডলার যোগাবে কে? এই রাষ্ট্রপতি বছরে ৪ বার বিদেশ যায় চিকিৎসা নিতে। আমার সমস্যা, মুক্তিযুদ্ধ না করেই যারা মুক্তিযোদ্ধা। আমার লজ্জা, মুক্তিযুদ্ধে যারা পাকিস্তানীদের সঙ্গে আতাঁত করেছিলো, তারাই যখন মুক্তিযুদ্ধকে নিলাম করে এর জমিদারি কামাচ্ছে। আমার একটি প্রশ্ন, খেয়েদেয়ে এই দেশের রাষ্ট্রপতির কাজটা কি? পদেরই বা প্রয়োজন কি! বরং লক্ষ টাকার হাতি না পুষে একে বিলুপ্ত করা জরুরি।

No comments: