Tuesday, December 01, 2015

বাংলা সিকিম

ভারত আমাদের সর্বনাশ করে অদৃশ্য সিকিম বানিয়েছে
♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥
আমজনতার মঞ্চ

খালেদার এখন ডু অর ডাই। আন্দোলন কিভাবে চালাতে হয়, জানেন না ম্যাডাম। সহজ পথ ছেড়ে দিয়ে, কঠিন পথে নামলে, ওই সুযোগে আওয়ামী হাইকমান্ড যতো পেরেছে বোমাবাজি করে মানুষ হত্যা শেষে সকল দায় চাপিয়েছে ম্যাডামের উপর কিন্তু প্রতিউত্তরে ম্যাডাম বোবা এবং ঠসা। হাসিনার বক্তব্য, খালেদার পাশে বসলে নাকি মানুষ পোড়া গন্ধ পায় এবং সেজন্যই খুনির সঙ্গে আলোচনা নয়। আমার উল্টা প্রশ্ন, ৩০৩ দিন হরতালের বিশ্বরেকর্ড, ২৮ অক্টোবর ২০০৬ সনে পল্টনে রণক্ষেত্র বাঁধিয়ে পিটিয়ে-পুড়িয়ে মানুষ মারা, জনতার মঞ্চ বানিয়ে পাইকারি সন্ত্রাস এবং ক্ষমতায় যেতে অবরোধের নামে জনজীবনে নরক নামিয়ে আনা... ম্যাডামের নাক কি বন্ধ হয়ে গেছে? পোড়া গন্ধ কি ঢোকে না? এই পর্যায়ের বিরক্তিকর নেতৃত্ব আমি জীবনেও দেখিনি। ম্যাডামের হাতে আওয়ামী সন্ত্রাসের লক্ষ দলিল কিন্তু ম্যাডাম কথা বলে বিবেকানন্দের মতো। বলেন আমি হাসবো না কাঁদবো?
প্রাচ্যের আফ্রিকায় যতোগুলো ইস্যুর সৃষ্টি করলো আওয়ামী মার্সিনারিরা, অন্য কোন দেশে এক-সহস্রাংশ হলে, সরকার পতন হয়ে যেতো। হয়নি? গেলো ১ বছরে পশ্চিমের প্রায় ৬ প্রধানমন্ত্রী সামান্য কারণে পদত্যাগ করেছেন, যার অন্যতম নাইটক্লাবে আগুন কিংবা সমুদ্রে জাহাজ ডুবির দায় কাঁধে নিয়ে। বাংলাদেশে যে পরিমাণ অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে প্রতিদিন, অবৈধ সরকার পতন না হওয়ার জন্য দায়ী- খালেদার বুদ্ধিহীনতা।
প্রাচ্যের আফ্রিকা বলতে বাংলাদেশ, যেখানে মিথ্যা গণতন্ত্রের নামে গডফাদাররা দিনদুপুরে খুন্তখারাবি করে কিন্তু দেশজুড়ে পয়দা হওয়া জগৎশেঠদের কারণে সবার মুখে উল্টা উন্নতির খুদবা। অবস্তা এমন, উল্টা আফ্রিকা থেকে সৈন্য এনে বাংলাদেশ পাহারা দেয়া উচিত। আফ্রিকায় অন্তত জনে জনে নিরাপত্তা দিতে হয় না, কিন্তু আমাদের হয়। যেমন, শাহারিয়ার কবির, ড. আনিসুজ্জামন, ইমরান সরকার, লেখক, প্রকাশক, ব্লগার, ডিপ্লোমেট পাড়া, এমনকি মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের বুয়াদের জন্যও রাষ্ট্রের বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী। আফ্রিকাতে গণতন্ত্র নেই সুতরাং তাদের গডফাদার মন্ত্রীরা যদি রাস্তাঘাটে যাকে খুশি গুলি করে, অবাক হওয়ারও কিছু নেই। আমাদের মন্ত্রী-এমপিরা গণতন্ত্রের নামে দিনরাত মিথ্যা বলছে এবং শিশু ও রিক্সাওয়ালাকেও গুলি করছে। মানুষের বেডরুমে ঢুকে বৌ ছিনতাই করছে, বেডরুমের বাইরে ইটিভি ছিনতাই করে প্রমাণ দিলো, এরা আফ্রিকান মার্সিনারিদের চেয়েও খারাপ। অবশ্যই আফ্রিকান মার্সিনারিদের এনে আমাদের গণতন্ত্র পাহারা দেয়া উচিত কারণ, আমাদের ওয়ারলর্ডদের চেয়ে আফ্রিকানরা নিরাপদ। বিএনপির জন্য আওয়ামী লীগের চেয়ে নরকও নিরাপদ। জাতিসংঘের শান্তিবাহিনীর প্রায় ৯ হাজার সদস্য বাংলাদেশি হওয়ায় আমরা দারুণ লজ্জিত। এদেশের সৈন্যরা আফ্রিকাতে কি পাহারা দেয়? বান কি মুনের প্রয়োজন মোটা অংকের চাঁদা, তাই তার মুখে কুলুপ, ষড়যন্ত্রের অন্যতম খলনায়ক।
এখন জিরো আওয়ার। আইনস্টাইনের থিওরি অব রিলেটিভিটির ভারসাম্যহীন সময় এটা। খালেদার ডু অর ডাই। জরুরি প্রয়োজন গণগ্রেফতার। ১ জন গ্রেফতার হলে ১০ জনকে তৈরি রাখা। ১০ জন হলে ১০০ জন। ৫০ জন হলে ৫০০ এবং ১০০ হলে ১ হাজার। অর্থাৎ ১ঃ১০। প্রয়োজনে আনুপাতিক হার বাড়িয়ে দিয়ে গণগ্রেফতারে সরকারকে এমন ব্যস্থ রাখতে হবে যেন গ্রেফতার করতে করতে সরকার নিজেই পাগল হয়ে যায়। যেন গ্রেফতার করতে করতে চোখে পথ না দেখে। যেন গ্রেফতারের বদলে পালানোর পথ খোঁজে।
কতো গ্রেফতার করবে? ৫৬ হাজার বর্গমাইলে কতো জায়গা আছে? লক্ষ লক্ষ কয়েদি রাখার কয় লক্ষ জেলখানা তৈরি করবে। অবৈধ সরকারের হাতে কয় লক্ষ পুলিশ যারা, লক্ষ লক্ষ বিরোধিনেতাকে গ্রেফতার করেও রাতের বেলায় নিশ্চিন্তে ঘুমাবে? অবৈধ সরকারের কোষাগারে কতো লক্ষ কোটি টাকা, যা দিয়ে জেলখানা তৈরি করে, ক্ষমতা দখলে রাখতে পারবে? এতো টাকা, পুলিশ, মিস্ত্রি আছে? ধরা যাক ৪ কোটি বিএনপি কর্মি, ভাবতে পারেন, ১ কোটিও যদি রাস্তায় নেমে গণগ্রেফতারে বাধ্য করে, চাঁদে পালিয়ে যাবে সরকার। প্রতি ১২০০ জনে মাত্র একজন পুলিশ, জেলখানায় ধারণ ক্ষমতা মাত্র ৭০ হাজার কিন্তু ইতোমধ্যেই ৪ গুণ বন্দি। ১ কোটিকে কোথায় রাখবে? খালেদার মাথায় এইসব চিন্তা নেই। খালেদার প্রধান অস্ত্র বিপুল কর্মিসম্পদ, এদেরকে রাস্তায় নামালে দিল্লি এবং গণভবন, ৫ জানুয়ারিসহ বঙ্গপোসাগরে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে বাঁচতো। গণগ্রেফতারের ক্ষমতা ৬৯এ দেখেছে বাংলাদেশিরা, মার্কিনিরা দেখেছিলো ড. কিং-এর আন্দোলনে। খালেদা জিয়া আসলে কিছুই জানেন না অন্যথায় রেডিক্যাল কম্যুনিস্ট সরকার এখনো ক্ষমতায়? ডু অর ডাই খালেদা।
২ অথবা ১০ জন নয়, স্বৈরাচারেরা গ্রেফতার করছে হাজারে। পুলিশের আইজি একটা আপাদমস্থক প্রধানমন্ত্রী। এই প্রশাসনের ঘরে ঘরে মন্ত্রী। টেলিভিশনের বাক্সে মন্ত্রী। মন্ত্রীর আত্মীয়স্বজনরাও প্রধানমন্ত্রী। এই দেশে কতোগুলো প্রধানমন্ত্রী বলা মুশকিল। গণভবন ভরা প্রধানমন্ত্রী। অর্থাৎ ইরানের শাহ্‌ এবং তার পরিবার। কতোগুলো প্যারালেল সরকার বলা মুশকিল। ইমরান সরকারও, সরকার। অর্থাৎ আফ্রিকার নৈরাজ্যকেও হার মানিয়েছে। কোন কোন গ্রামে বিরোধিদলের সব পুরুষ পালিয়ে গেছে। কোন কোন শহরে বিরোধিদলের সবাই হাওয়া। অধিকাংশই আত্মগোপনে কিংবা দেশ ছেড়েছে। রাজধানীতে যারাই নেতৃস্তানীয় এবং উঁচুস্থরের কর্মি, যদি ভদ্রভাষায়ও বলি, জালিম সরকারের একটাই কাজ, প্রত্যেকের লেজে আগুন দেয়া। কাজ না থাকলে করবেটা কি? আজ সড়কের মাথা উদ্বোধন, কাল পা, পরশু হাত। এই তো প্রতিঘন্টায় উন্নতির সরকার। বছরের পর বছর বিনা বিচারে জেলখানায় রেখে স্লোপয়জনিং করছে, কেউ কেউ মারাও গেছে। মাহমুদুর রহমান এবং বাবর মৃত্যুপথে। পিন্টুকে আগেই মেরেছে। কয়টা বলবো? সাধারণত স্টালিন কিংবা ক্যাস্ট্রোর মতো নৃশংস্য ফেরাউনরাই এই ধরনের অত্যাচারের দৃষ্টান্ত। অবৈধ সরকার আপাদমস্থক রেডিক্যাল কম্যুনিস্ট। গণতন্ত্রের কথা বলে ৬৯এর আন্দোলন, পেয়েছি ৭৫এর কম্যুনিস্ট সংবিধান। খালেদা ডু অর ডাই।
ক্ষমতা দখলের পরেই র-এর সৈন্যরা এসে বিডিআর হত্যাকান্ড ঘটিয়ে ব্রিলিয়ান্ট অফিসারদেরকে হত্যা করলো। পাখির মতো মানুষ মারছে সীমান্তে কিন্তু একজন ভারতীয়কেও বিজেবি হত্যা করেছে বলে খবর নেই। ২০১৫ সনে আজব্দি হত্যা করেছে ২৪ জন। কিন্তু অবৈধ সরকার কখনোই এর প্রতিবাদ করে না। করবে কি করে? এখানেই বিডিআর হত্যাকান্ডের সাফল্য। অর্থাৎ সীমান্ত বিএসএফ-এর দখলে। বিজেবির জন্য সীমান্তের ৬ মাইল পর্যন্ত নিষিদ্ধ। ভারতীয়রা মরে না শুধুই বাংলাদেশিরা মরে, এরপরেও প্রমাণ চাই?
ডু অর ডাই খালেদা। বিরোধিদলকে প্রায় নির্মূল করে ফেলেছে নব্য ফেরাউন। পাইকারি হারে গ্রেফতার করে ভরে ফেলেছে কারাগার। মৃত্যুঝুকিতে খালেদার বহু নেতাকর্মিদের অন্যতম মির্জা ফকরুল। তার ধমনীর যে জায়গায় ব্লক, যে কোন সময় মৃত্যু হতে পারে কিন্তু জেনেশুনেও রিমান্ডে পাঠিয়েছে বিচারহীন বিচারকেরা। যাদের হাতে বিচারের ভার, তারাই যখন দিনদুপুরে অপরাধ করে, বিচার উঠেছে চিতায়। যে বেটা কালো মানিক অতীতে আপিল বিভাগের বিচারপতি, বেঈমানটা এখন টকশো করে? এই লোক এখন সাপ এবং ওঝার ভূমিকায়। টকশোতে বসে জামায়েত-বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার বুদ্ধি দিচ্ছে আপিল বিভাগের এই বিচারক। ট্রাইবুন্যালের নামে জুডিশিয়াল কিলিং, আর কি প্রমাণ চাই? খালেদা ডু অর ডাই।
খালেদার মনোজগত বোঝা কঠিন। আমনের দরে জেলেহাজতে ভরছে হাজার হাজার নেতাকর্মি কিন্তু তিনি নিরব। গণগ্রেফতারের কথা তার মাথায় নেই। আমি জানি, রাস্তায় যদি হাজার হাজার নেতাকর্মির ঢল নামতো, যদি গণগ্রেফতারে বাধ্য করা হতো, যদি শান্তিপূর্ণ মিছিল করে শ্লোগান দিয়ে ভরে ফেলতো আকাশ-বাতাস... পালানোর পথ খুঁজে পেতো না ভয়ংকর হাসিনা। তার অবস্তা হতো আফ্রিকার চার্লস টেইলরের মতো। কারণ তার সরাসরি নির্দেশেই বিরোধিদলকে নির্মূল করা হচ্ছে। নেতাকর্মিরা পালিয়ে না থেকে গণগ্রেফতারে বাধ্য করতে সমস্যা কি?
পশ্চিমে যতো মুভমেন্ট, গণগ্রেফতারের জন্য মুখিয়ে থাকে নেতাকর্মিরা। গ্রেফতার হওয়ার জন্য এগিয়ে এসে পুলিশকে উত্তপ্ত করে। এমনকি মহাত্মা গান্ধিও ১৯১৫ সনে আফ্রিকাতে সেটাই করে পরবর্তীতে মহাত্মা গান্ধি হতে পেরেছেন। তাকে অনুসরণ করেছেন, ম্যান্ডেলা এবং ড. কিং। কারণ, প্রতিটি গণগ্রেফতারের সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার করা হয়। সাধারণ মানুষ তখন প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্বরব হয়। এইভাবেই মুভমেন্টের উপর ইতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করে দাবি আদায় করে এক্টিভিস্টরা। এভাবেই আন্দোলন সফল হয়। খালেদার উচিত এখনই নেতকর্মিদেরকে গণগ্রেফতারের জন্য রাস্তায় নামিয়ে দেয়া। লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মি শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তায় নামলে, একবার ভাবুন...।

দেশ কতোটা ব্যক্তিমালিকানায়, আজ তার প্রমাণ দিলো স্বঘোষিত মাস্তান মেয়র আনিসুল হক। অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর নেক নজরে আসার জন্য ট্রাকস্ট্যান্ডের লেজে আগুন দিতে গিয়ে গোলাগুলির পর, যা ঘটলো সকলেই দেখেছে। হনুমানের হাতে খন্তা দিলে যা হয়।
মস্তিষ্কহীনরা একেকটা দুর্ঘটনা ঘটায় আর গুলিগালাজ হলেই টাকা দিয়ে মিটিয়ে ফেলে। যেমনটি হয়েছিলো, হেফাজত এবং ৭ মার্ডারের বেলায়। ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি। আজ কি হলো? গুলিগালাজের পর, ট্রাক মালিকদের খবর পাঠালো, প্রধানমন্ত্রী নাকি ট্রাকস্ট্যান্ডের জন্য নগদ অর্থ বরাদ্দ করেছেন। এরপর সবাই খুশি। একেই বলে হনুমানের হাতে খন্তা। এতো টাকা কোথায় পায়? টিআইবি এবং রওশনের অভিযোগ রানাপ্লাজার ১০৮ কোটি টাকা এখনো প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণতহবিলে। আমাদের প্রশ্ন, টাকা আর কোত্থেকে আসে? এদিকে ফেইসবুক বন্ধ করে মুদ্রাপাচারকারি খুঁজছে। ভাগ্যের কি পরিহাস! একজন প্রধানমন্ত্রীকেই যদি বারবার গন্ডগোল বাঁধিয়ে শোধরাতে হয়, সেটাকে কি বলবো?

মুদিখানার মতো টেলিভিশনের দোকান খুলে বসেছে খয়েরখালীগ। যারাই ব্যতিক্রম, আক্রান্ত হচ্ছে যেমন, দিগন্ত টিভি এবং আমাদের দেশ পত্রিকা। ইটিভি চেয়ারম্যানকে কারাগারে রেখে ছিনতাই করলো ২১শে টিভি। আনিসুল হকের নাটক শেষ হলে, প্রতিটি মুদিখানার টকশোতে ট্রাকস্ট্যান্ড নিয়ে আলোচনা, যেন এই দেশে করার আর কিছুই নেই। দুএকজন যারা সমালোচনা করতো, যেমন পরিবেশবিদ ইকবাল হাসান, এখন দেখি সেও খয়ের খা। একটি আলোচনায় ৪ জন গেস্টের ৩ জনই মাত্র ৩০ সেকেন্ডে ৯ বার বললো, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আপনারাই বলেন, আর কতোবার মাননীয় বললে যথেষ্ট মাননীয় বলা হয়? আমি একেবারেই নিশ্চিত, যে হারে মাননীয়, মাননীয় বলতে থাকে, সবকটাই রামছাগলে রূপান্তরিত হয়েছে। আমি ভুল হলে প্রমাণ করুন। প্রতিটি মানুষই নানানভাবে কথা বলে কিন্তু সবকটা রামছাগলই একরকম চিৎকার করে।

বলতে চাইনি কিন্তু বলতে হচ্ছে। ব্লগার হত্যা নিঃসন্দেহে নিন্দনীয়। কিন্তু সুযোগ সন্ধানীদের যেন কপাল খুললো। ভিসা নিয়ে রাতের অন্ধকারে একটার পর একটা বিদেশে পালানোর ধুম। মানবজমিনে দেখলাম, আমেরিকার উদ্দেশ্যে রাতের অন্ধকারে প্রকাশক টুটুলের দেশত্যাগ। প্রস'তি নিচ্ছেন ব্লগার রণদীপম বসু। পালিয়ে গেছে শাম্মি হক এবং অনন্ত আজাদ। আরো অনেকেই জার্মানি, ইংল্যান্ড, আমেরিকাতে পালিয়ে যাওয়ার পথে। সময় প্রকাশনীর ফরিদ নাকি ভারতে পালিয়ে আছে। বলতে হয় না তবু বলছি, কয়েকজন ব্লাগার হত্যা হওয়ার পর, যেভাবে রাতের অন্ধকারে অনেকেই দেশ ছাড়ছে, যেন এটাই তারা চেয়েছিলো। কেন বলছি? কারণ, আমি ভুল হলে, তাদের উচিত ছিলো চোরের মতো পালিয়ে না গিয়ে বীরের মতো গণভবনের সামনে আমৃত্যু অনশন করে দায়ী ব্যক্তিকে পদত্যাগে বাধ্য করা।
৫ জানুয়ারিতে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে একদলীয় শাসন কায়েমের মাধ্যমে একটি বিশাল বিরোধিদলকে যেভাবে ধ্বংস করলো, খুনিরাও এইরকম বেসামাল শাসকের অপেক্ষাতেই ছিলো। বেসামাল শাসক একদিকে রাষ্ট্রধর্মও রাখবে আবার বলবে ধর্মনিরপেক্ষ। রাষ্ট্রধর্ম থাকলে ধর্মনিরপেক্ষ হয় কি করে, বোঝার মতো মস্তিষ্ক রামছাগলেদের নেই। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে ধর্মের বিরুদ্ধে যা কিছু বলা যাবে। রাষ্ট্রধর্ম থাকলে, ধর্মের বিরুদ্ধে টু-শব্দটিও করা যাবে না। ইহুদিরা কখন মুসলমান হয়? অন্তত আমার জানা নেই। বলছি, হাসিনা না হয়ে যদি একটা তালগাছও প্রধানমন্ত্রী হতো, দেশের অবস্তা এতো খারাপ হতো কি? দেশটাকে আইসলদের জন্য উন্মুক্ত করলো যে ব্যক্তি, তার বিরুদ্ধে আন্দোলন না করে, রাতারাতি যারাই চোরের মতো পালিয়ে যাচ্ছে, বলবো, আপনাদের ভাগ্য খুলেছে। হয়তো নিজেদের ভাগ্য গোছাতে এটাই চাইছিলেন।
ফরিদের কথাই যদি বলি, তার বিশ্বাস, মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধাপরাধ নিয়ে বই প্রকাশ করার অপরাধে হুমকি দিচ্ছে। এই ধরনের লোকজনদের নিয়ে বড়ই বিপদে আছি। চেতনা আর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এতো মাথাব্যথা? এসব নিয়ে আর কতো বই বের করতে হবে? কয়জন পড়ে? এইসব লিখে জাতির কি উপকার করছে? মানুষের উপর কি প্রভাব ফেলছে চেতনা এবং মুক্তিযুদ্ধের বই? নাকি উল্টা ফিলিস্তিনের যুদ্ধ বাঁধিয়েছে প্রকাশকরাও। চেতনা আর মুক্তিযুদ্ধ ব্যবসায়ীদেরকে অন্তর থেকে ঘৃণা করি কারণ মহৎ একটি কাজকে ব্যবসা বানিয়ে প্রচুর কামাচ্ছে। চেতনা আর মুক্তিযুদ্ধের বারোটা বাজিয়ে স্বর্ণের নামে ভেজাল ক্রেস্ট দিয়েছে। ৭১এর নামে লক্ষ কণ্ঠে জাতিয় সঙ্গিতের নামে প্রচন্ড চাঁদাবাজি করেছে। আমি ভুল হলে প্রমাণ করুন, বিদেশিদেরকে দেয়া সোনার ক্রেস্টে ভেজাল ছিলো না? প্রমাণ করুন, মুক্তিযুদ্ধ থেকে পালিয়ে থাকতে দেশে এবং বিদেশে মুজিব পরিবার কি পাকিস্তানীদের আশ্রয়ে ছিলো না? সব কথাই বলতে নেই কিন্তু বলতে বাধ্য করা হচ্ছে।

ভারতের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেছে নেপাল। সব সম্পর্ক কাট। নেপালকেও প্রায় অঙ্গরাষ্ট্র বানিয়ে ফেলেছিলো। নেপালের মানুষ সেটা বুঝতে পেরে অবশেষ নাড়ি কর্তন। সর্বশেষ খবর, সবগুলো ভারতীয় চ্যানেল বন্ধ করে দিয়েছে। পারবে আওয়ামী লীগ?

টেলিভিশনগুলো মুদিখানার মতো হওয়ায় মন্ত্রীরাও এখন হাটের বেপারি। সদরঘাটে যাতায়াতের পথে টেলিভিশনে টকশো করে। খেয়েদেয়ে কাজ না থাকলে কি করবে! আমি পৃথিবীর কোন দেশেই দেখি নাই, মন্ত্রী-এমপিরা কাজ বাদ দিয়ে সারাক্ষণ টেলিভিশনের পেটের মধ্যে বসে থাকে। সত্যিই বড় বিচিত্র এ দেশে। এমপি পাপন কি ক্রিকেট মন্ত্রী? শাহজাহান খান কি শ্রমিক মন্ত্রী? খাদ্য এবং ত্রাণ মন্ত্রীর কাজ সারাক্ষণ খালেদার লেজে আগুন দিয়ে সাংবাদিকদের ব্যস্থ রাখা। মন্ত্রী ইনুর আরেক নাম গালিগালাজ মন্ত্রী। যদি ভদ্র ভাষাতেও বলি, তাদের কর্মকান্ডই প্রমাণ করে, খেয়েদেয়ে কাজ নেই তাই মুদিখানায় এসে সারাক্ষণ আড্ডা দেয়।

বিষয়টি কেউ লক্ষ করেছেন কিনা! ওবামা আর হাসিনা, দুজনেই একইরকম দুঃসহ কর্মকান্ডের জন্য জনবিচ্ছিন্ন। দুইজনই নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগের রেকর্ড।
তবু তো ওবামার সঙ্গে দ্বিমত পোষণের সুযোগ পান এমপিরা। সমস্যা ওবামাকে নিয়ে। বিরোধিদলের কোন কাজই পছন্দ নয় তাই নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ। ইতোমধ্যেই দিন গুনছে, ত্যাক্তবিরক্ত মার্কিনীরা। দারুণ বিরক্ত এমনকি নিজ দলের লোকেরাও। গণতন্ত্রের আশির্বাদ এটাই, দুইটার্ম শেষে ওবামার বিদায় হতে আর মাত্র ১ বছর বাকি। হাসিনার মতো সেও যদি ২০৪১এর রূপকল্পের লেজ ধরে টানাটানি করতো, একবার ভাবুন, আমেরিকার অবস্তা কি বাংলাদেশের মতো হতো না? আমাদের বুক ইতোমধ্যেই হালকা হতে শুরু করেছে কিন্তু অভিশাপ গিলে খেয়েছে মাতৃভূমি। ভারত আমাদের সর্বনাশ করে অদৃশ্য সিকিম বানিয়েছে। পৃথিবীতে কোথাও যদি টার্মলিমিট প্রয়োজন হয়- বাংলাদেশ। আন্দোলন চলুক টার্মলিমিটের পক্ষে।

কথায় বলে, এক কান কাটলে বাইরে দিয়ে, দুই কান কাটলে যায় ভিতর দিয়ে। আমি কখনোই পশ্চিমের প্রভাবশালী পত্রিকাগুলোকে পাইকারিহারে কোন দেশের সরকার প্রধানের সমালোচনা করতে দেখিনি। প্রতিদিনই এতো যে সমালোচনা, তবু তার লজ্জা নেই।
১০
যে দেশের আদালত কাজ করে না, সেই দেশ একটি কল্পিত দেশ, যার কোন বাস্থবতা নেই। কল্পনার বাংলাদেশ কেমন? এক কে সিনহা নিজ মুখে বলেছেন, ২০ বছরের মামলা জট। অথচ আজ এক আদালতে ফকরুলের বিচার, অন্য আদালতে খালেদার। আছে লক্ষ লক্ষ গ্রেফতারকৃত বিরোধি কর্মিরা। মামলা জট বনাম বিচারকের সংখ্যা বনাম ৯৯ ভাগই বিরোধিদলের বিরুদ্ধে মামলা। এবার বলুন, বাংলাদেশ বাস্থবে নাকি কল্পনায়?
১১
এককথায় প্রকাশ। অবৈধ সরকার ফন্দি করেছে, ১৭ কোটি মানুষকে কিছুতেই ৭১এর বাইরে যেতে দেবে না। অর্থাৎ ১৯৭২, ২০১২, ২০৪২... পঞ্জিকা থেকে উধাও। ৭১এর খাঁচায় বন্দি রেখে, চেতনার ডাল-ভাত খাওয়াবে আর জাতিয় সঙ্গিত দিয়ে ঘুম পারিয়ে রাখবে। ওদের পঞ্জিকা পেছন থেকে শুরু হয় অর্থাৎ ৭১ থেকে ৬৫। আমাকে মিথ্যা পমাণ করে দেখান, এই দেশে যেসকল কর্মকান্ড পালিত হচ্ছে, কোনটা ৬৫ থেকে ৭১এর বাইরে? ৭১এর বাইরে যেসকল অনুষ্ঠান, সবকটাই ৭১কে কেন্দ্র করে। অর্থাৎ ক্যালেন্ডার যখন সামনের দিকে আগায়, আওয়ামী ক্যালেন্ডার শুরু হয় পেছন থেকে। ৭১এ বন্দি রেখে চেতনার নামে একটি জাতিকে ধ্বংস করার মহাপরিকল্পনা।
লেখিকা :মিনা ফারাহ,বিশিষ্ট কলামিষ্ট ও রাজনৈতিত বিশ্লেষক,যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী

No comments: