Saturday, December 31, 2016

জোড়ার আঘাত

 কোনো না কোনো সময় যে কেউ জোড়ার আঘাতে ভুগতে পারে। তবে পেশাদার বা শৌখিন খেলোয়াড়দের মাঝে এ সমস্যাটা বেশি দেখা যায়। মানব শরীরে ২০৬টি হাড় থাকে এবং এদের সমন্বয়ে ছোটবড় প্রায় ১৪৭টি জোড়া তৈরি হয়। খেলাধুলা, বিভিন্ন ধরনের একসিডেন্ট, শারীরিক আঘাত ও পেশাগত কাজ থেকে জোড়া আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে থাকে। ইনজুরি বা আঘাতের সময়কাল বিবেচনা করলে, কিছু আঘাত তৎক্ষণাৎ এবং কিছু আঘাত দীর্ঘসময় ধরে (ওভার ইউজ ইনজুরি) হয়। ইনজুরি বা আঘাত জোড়াকে বিভিন্ন স্তরে আক্রান্ত করে। আঘাতের তীব্রতা অনুসারে জোড়ার আবরণ, লিগামেন্ট, হাড়, তরুনাস্থি বা মেনিসকাস এবং পেশি আক্রান্ত হয়। শরীরের যে কোনো জোড়া আক্রান্ত হতে পারে। তবে গোড়ালি, হাঁটু, কটি, কাঁধ, কনুই, মেরুদ- ও আঙুলের জয়েন্ট আঘাতে বেশি ভোগে। 

আঘাতের কারণসমূহ 
১. হঠাৎ মোচড়ানো (টুইসটিং) মুভমেন্ট। 
২. জোড়ায় সরাসরি আঘাত। 
৩. রিকশা থেকে পড়ে গেলে, গাড়ি বা মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় জয়েন্ট ইনজুরি হয়। 
৪. ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবল, কাবাডি ও হা-ডু-ডু খেলোয়াড়দের জোড়া ইনজুরির প্রবণতা বেশি। 
৫. মই থেকে পড়লে, ওপর থেকে লাফ দিয়ে পড়লে এবং গর্তে পড়ে গেলে জোড়া ইনজুরি হয়। 
৬. সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় এক স্টেপ ভুল করলে। 
৭. বয়স্কদের ব্যবহারজনিত ক্ষয়ের জন্য জোড়া ইনজুরি হয়। 
৮. পেশাগত কারণে দীর্ঘসময় দাঁড়ালে, বসলে, জোড়া নড়াচড়া করলে এবং হাত উঁচু করে কাজ করলে জয়েন্ট ইনজুরি হয়। 
৯. সামনে ঝুঁকে ভারী ওজন তুললে। 
আঘাতের প্রকারভেদ 
১. জোড়ার চারপার্শ্বের চামড়া টিয়ার ও চামড়ায় রক্তক্ষরণ। 
২. পেশির স্ট্রেইন, রক্তক্ষরণ ও টিয়ার বা ছিঁড়ে যাওয়া। 
৩. লিগামেন্ট স্প্রেইন ও আংশিক বা সম্পূর্ণ ছিঁড়ে যাওয়া। 
৪. জোড়ার আবরণ বা ল্যাবরাম ছিঁড়ে যাওয়া। 
৫. আংশিক বা সম্পূর্ণ হাড় ভাঙা। 
৬. জয়েন্ট আংশিক বা সম্পূর্ণ স্থানচ্যুতি হতে পারে। 
৭. তরুনাস্থি বা মেনিসকাস আংশিক বা সম্পূর্ণ ছিঁড়তে পারে। 
আঘাতের উপসর্গ 
১. প্রথমে তীব্র ব্যথা, পরে আস্তে আস্তে ব্যথা কমে আসে। 
২. জোড়া নড়াচড়া করলে ব্যথা বেড়ে যায়। 
৩. আঘাতের প্রথম দশ মিনিটের মধ্যে বা ২/৩ ঘণ্টা পর জোড়া ফুলে যায়। 
৪. ফুলা ও ব্যথার জন্য মুভমেন্ট করা যায় না। 
৫. দাঁড়াতে বা হাঁটতে চেষ্টা করলে মনে হবে জোড়া ছুটে যাচ্ছে বা বেঁকে যাচ্ছে। 
৬. আঘাতের সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তি ‘পপ’ বা ‘ক্র্যাক’ শব্দ শুনতে বা বুঝতে পারে। 
৭. কিছুদিন পর বেশিক্ষণ বসলে, হাঁটু বা পা সোজা করতে কষ্ট হয় বা আটকিয়ে যায়। 
৮. অনেক সময় আঘাতের অনেক দিন পর জোড়া ফুলে যায়, ভালো হয় এবং আবার ফুলে। এভাবে চলতে থাকে। 
৯. দীর্ঘদিন যাবৎ ইনজুরি থাকলে পেশি শুকিয়ে যায় এবং জোড়ায় শক্তি কমে যায়। 
১০. উঁচু-নিচু জায়গায় হাঁটা যায় না, সিঁড়ি দিয়ে উঠা নামা করতে এবং বসলে উঠতে কষ্ট হয়। 
১১. কাঁধ ও কনুই ইনজুরির জন্য কাত হয়ে ঘুমানো, পিঠ চুলকানো, জামার বোতাম লাগানো, চিরুনি দিয়ে মাথা আঁচড়ানো এবং হাত দিয়ে ওজন তোলা যায় না। 
১২. জোড়ার অস্বাভাবিক আকৃতি বা অবস্থান। 
১৩. খেলোয়াড় কখনো ইনজুরির পরপরই মাঠ ত্যাগ করে অর্থাৎ খেলা সম্ভব হয় না। কখনো কখনো অবশ্য খেলা চালিয়ে যাওয়া যায় এবং শেষের দিকে মাঠ ত্যাগ করতে হয়। 
জরুরি চিকিৎসা 
১. জোড়াকে পূর্ণ বিশ্রামে রাখতে হবে। 
২. বরফের টুকরা টাওয়ালে বা ফ্রিজের ঠান্ডা পানি প্লাস্টিকের ব্যাগে নিয়ে লাগালে ব্যথা ও ফুলা কমে আসবে। প্রতি ঘণ্টায় ১০ মিনিট বা দুই ঘণ্টা পরপর ২০ মিনিট অনবরত লাগাতে হবে। তবে এটা সহ্যের মধ্যে রাখতে হবে। এই পদ্ধতি আঘাতের ৪৮-৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত চলবে। 
৩. জোড়ায় ইলাসটো কমপ্রেসন বা স্পিলিন্ট ব্যবহারে ফুলা ও ব্যথা কমে আসে। 
৪. জোড়ার নিচে বালিশ দিয়ে উঁচু করে রাখলে ফোলা কম হবে। 
৫. কোমরে সাপোর্ট বা কোরসেট ব্যবহার করতে হবে। 
৫. এনালজেসিক বা ব্যথানাশাক ও দরকার হলে এন্টিবায়োটিক ওষুধ সেবন। 
৬. হাড় ভাঙলে বা জোড়া স্থানচ্যুতি হলে দ্রুত হাসপাতালে স্থানান্তার করতে হবে। 
প্রয়োজনীয় চিকিৎসা 
প্রাথমিক চিকিৎসায় রোগীর ব্যথা ও ফোলা সেরে ওঠার পর, জোড়ার বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে কি কি লিগামেন্ট, পেশি বা মেনিসকাস ইনজুরি হয়েছে এবং এর তীব্রতা নির্ণয় করতে হবে। কখনো কখনো এক্সরে ও এমআরআই-এর সাহায্য নিতে হয়। লিগামেন্ট, মেনিসকাস, জোড়ার আবরণ ও পেশি ইনজুরির চিকিৎসা প্রদান করতে সক্ষম এমন আর্থ্রােস্কোপিক চিকিৎসকের কাছে বা সেন্টারে রোগীকে পাঠাতে হবে। প্রাথমিক বা শল্য চিকিৎসার পর নিয়মিত ও উপযুক্ত পরিচর্যা করে জোড়ার স্বাভাবিক অবস্থা দ্রুত ফিরিয়ে আনা সম্ভব। 

Wednesday, December 28, 2016

ভালবাসার পুরুষের সাথে যা করবেন না

যে কোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রেই পারস্পরিক বিশ্বস্ততা ও সমঝোতা থাকা জরুরী। সেই সঙ্গে দরকার একে অপরের প্রতি সম্মানবোধ। আপনি আপনার প্রেমিক বা স্বামীকে ভালোবাসেন। কিন্তু তারপরও মাঝে মাঝে আপনার কোন একটা কর্ম বা আচরণের কারণে দু'জনের মধ্যে মনোমালিন্য তৈরি হতে পারে। তাই সম্পর্কের ক্ষেত্রে হতে হবে আরো যত্নশীল।

সঙ্গীর সঙ্গে চমৎকার সম্পর্ক ধরে রাখতে কয়েকটি ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন। এগুলো হলো:

১. আপনার সঙ্গী যদি আপনার চেয়ে শিক্ষাগত যোগ্যতায় বা সামাজিক পদমর্যাদা কিংবা তিনি যদি আপনার চেয়ে কম বেতন পান তাহলে তাকে এসব ব্যাপারে কখনোই খোটা দেবেন না। এতে তিনি ব্যথিত হবেন, তেমনি সম্ভাবনা থাকবে সম্পর্ক ভেঙে যাবারও।

২. সঙ্গীর আয়-রোজগারের ব্যাপারে যতটা সম্ভব কম কথা বলুন। তাকে আয় বাড়ানোর জন্য চাপাচাপি করবেন না। তাছাড়া আপনার সঙ্গী কীভাবে খরচ করেন, কেন খরচ করেন এসব নিয়ে বেশি কথা জিজ্ঞেস করলেও বিরক্ত হবেন। আর বারবার অর্থনৈতিক ব্যাপারে কাউকে উত্যক্ত করা মানে তাঁকে ছোট করার চেষ্টা করা। তাই এ কাজটি করা থেকেও বিরত থাকুন।

৩. আপনার কাছে যেমন আপনার পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি আপনার সঙ্গীর কাছেও তার পরিবার-পরিজন গুরুত্বপূর্ণ। তাই তার আপনজনদের ব্যাপারে কোনো কটু কথা বলবেন না। আর বাইরের কারো সামনে তাকে ছোট করে কিছু বলবেন না।

৪. অন্য কারো সঙ্গে তুলনা দেবেন না। কখনোই বলবেন না যে, তুমি অমুকের মতো হ্যান্ডসাম না বা তমুকের রুচি তোমার চেয়ে ভালো।

৫. প্রেমিক বা স্বামীর বন্ধুদের সঙ্গে বেশি ঘনিষ্ঠতা না রাখাই ভালো। নয়তো দেখা দিতে পারে নানা রকমের সমস্যা। এতে আপনার সঙ্গীর মনে দেখা দিতে পারে অমূলক সন্দেহ কিংবা আপনার সঙ্গীর বন্ধু আপনার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়তে পারে ইত্যাদি। এছাড়া নিজের ব্যক্তিগত সমস্যার কথা তার বন্ধুকে শেয়ার করা নিয়েও আপনাদের দু'জনের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে।

Tuesday, December 27, 2016

বড় ভালবাসি

নিজেকে আড়ালে ঢেকে তোমার সাম্রাজ্যের পত্তনে
আমি তোমাকে ভেঙে ভেঙে জেনে নিতে চাই,
তোমার শর্বরী অধরের লবণাক্ত জলসীমা,
তোমার মৃগাঙ্ক চোখের বানভাসি অক্ষাংশ,
তোমার বিভাবরী কুন্তলের মারণ মোহনা,
তনু থেকে অতনুর ভাইট্যাল স্ট্যাটিসটিক্স,
বিরুদ্ধবাদী ষড়যন্ত্রীর মত আমিও তোমার
নিষেধের দেয়াল টপকে জেনে নিতে চাই
কখন বৃষ্টি ঝরে তোমার অনিকানো বন্দরে,
কখন জোয়ার ভাঁটার টানে বাণ ডাকে নদে,
কতোটা উদ্ধত হলে জয় করা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা,
কতোটা নৈকট্যে ছোঁয়া যায় গোপন মণিকাঞ্চন,
তুমি যদি কখনো দুঃসহ ক্রোধে জানতে চাও
এই সীমাহীন অনধিকার চর্চার অন্য নাম কি,
আমি শুধু বলব, ভালোবাসি, বড় ভালোবাসি